MD MONIR HOSSAIN
SAJEK I KHAGRACHARI I MD MONIR HOSSAIN I BANGLADESH I 2024
পাহাড় আমাকে আকর্ষণ করে, কিন্তু সাজেক আমাকে নিজের করে নিতে পারলো না, মন ও মনন কোনটায় তৃপ্ত হয়লো না!
হালের সাজেক ট্রিপের এতো আবহ শুনতেছি চারদিকে, তাই একটু ঢু মারলাম সাজেক ভ্যালিতে! আর হ্যা, আপনি যদি বান্দরবান এর কেওক্রাডং বা থানচির দিকে ঘুরে থাকেন, তাহলে জীবনেও হয়তো সাজেকমুখী হবেন না! আর প্রথম পাহাড় দর্শন হলে সাজেক হবে ভূস্বর্গ
কিন্তু পাহাড় বলতে প্রাকৃতিক ব্যাপরটা বোঝায়, সাজেকে সেটার ছিটেফোটা একেবারে নেই। সাজেকে এসি পাবেন! জি এসি পাবেন সাথে তিনতলা বিল্ডিং এর রিসোর্ট পাবেন। রাত হলে রুইলুই পাড়াতে হাটার যায়গা পর্যন্ত থাকে না!! আর বাশের চিকেন নামে মানুষকে ধোকা দিয়ে কতশত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রেষ্টুরেন্ট গুলো, কড়াই পাতিলে রান্না করে, সেটা বাশে ঢুকায় দিয়ে হয়ে যায় তথাকথিত ব্যাম্বু চিকেন!
তবে সাজকের রুইলুই পাড়ায় না থেকে যদি কংলাক পাড়ায় থাকেন, তাহলে আপনি হতাশ হবেন না, একটু নিরিবিলিতে পাহাড় সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। রাতের অন্ধকারে আকাশ ভরা তারা আর গানের আড্ডা
দিঘিনালা থেকে সাজেক পর্যন্ত সড়কটাই আপনাকে অন্যরকম আনন্দ দিবে! ছোট ছোট বাচ্চারা পাড়ায় দাড়িয়ে থাকে, অভিবাদন দেয়, প্রথমে ভাবছিলাম নেহাত অভিবাদন,কিন্তু পরে দেখলাম ওরা টাকা, চকলেট, বিস্কুট পাওয়ার আশায় দাড়িয়ে থাকে।
আমার রিকুয়েষ্ট থাকবে, কেউ শীতে পাহাড়ে কিংবা সাজেক গেলে ওদের জন্য দামী কিছু না হলেও ছোট একটা করে পেট্রোলিয়াম জেলি নিতে পারেন সাথে কিছু চকলেট। তাহলে ওদের দাড়িয়ে থাকাটাও আনন্দদায়ক হবে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাতে। আর হ্যা, অবশ্যই গাড়ী থামিয়ে দিবেন, চলন্ত গাড়ী থেকে দিলে বিপদজনক হবে!
মিরিঞ্জা বাগান পাড়া লামা উপজেলা সদরের মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স এর পাশে অবস্থিত। প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়ে পর্যটকদের অনাবিল আনন্দ দিতে চিরসবুজ সাজে সেজেছে বান্দরবানের লামার মিরিঞ্জা পাহাড়। প্রকৃতি যেন তার উদার হাতে সুনিপুণ কারিগরের মতো মুকুটশিখর মিরিঞ্জা পাহাড়কে মোহনীয় করে সাজিয়ে রেখেছে।হ্যাপি ট্রাভেলিং
সাগরপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৫শ ফুট উঁচু মিরিঞ্জা পর্যটন পাহাড়। এখানে ওঠা মাত্রই দৃষ্টিগোচর হয় লতাগুল্মের দৃশ্যশোভা, পাখ-পাখালির কল-কাকলি। এসব চোখ, কান, মন সব ভরিয়ে তোলে। মাথার উপর টুকরো নীল আকাশ, প্রতিনিয়ত মেঘ ছুঁয়ে যায় মিরিঞ্জা পাহাড়ের গায়।
এছাড়া জংলি ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মাখামাখি, পাহাড়ের নীচে লুকানো ঝরণা, চূড়ায় উপজাতীয় টংঘর, জুম চাষ আর অরণ্যরাণীর ঐতিহ্যের পোশাক।
উপজাতীয়দের টং-ঘরে পাহাড়ি নর-নারীর সরল জীবনযাপন, এ যেন এক অনন্য ভুবন। মিরিঞ্জা চূড়া যেন এক সবুজ মায়া; টিলা-টক্কর, পাহাড়ি ঝরণা, কাঁকর বিছানো পথ— এখানে কতো যে আমোদ ছড়ানো পথে পথে তা এখানে না এলে বোঝাই যাবে না। এখানকার মানুষের হৃদয়ে রয়েছে দিগন্তের বিস্তার আর আতিথ্যের ঐশ্বর্য।
জুম ঘর দেখার ইচ্ছে টা অনেক আগে থেকেই ছিলো। কবে পাহাড়ে যাবো জুম ঘরে ছবি তুলবো ভিডিও করবো। এবার বান্দরবান টুরে অবশ্য সেই ইচ্ছে টা পূরন হলো।
ছবিটা বান্দরবান টুরের তৃতীয় দিনের। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে মেঘের দেশ ও জুম ঘর দেখা উদ্দেশ্য রওনা হই মিরিঞ্জা বাগান পড়া ও মিরিঞ্জা ভেলির উদ্দেশ্যে। এক মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এই বুঝি বৃষ্টি এলো আবার কুয়াশা।জুম ঘরে বসে পাহাড়ের অপরুপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সকালের সময়টা বেশ দারুণ কেটেছে। পাহাড় মানে শান্তি, ইচ্ছে করে বার বার ছুটে চলে যাই পাহাড়ে।