KAPTAI I RANGAMATI I Fardun Islam I I TRAVEL STORY I 2024

Fardun Islam I KAPTAI I RANGAMATI I TRAVEL STORY I 2024

Fardun Islam I KAPTAI I RANGAMATI I TRAVEL STORY I 2024

কাপ্তাই, রাঙামাটি

আমাদের এবারের ট্যুরের মূল প্ল্যান ছিলো রাঙামাটির কাপ্তাই ঘুরা। বাইকে করে রাত ১১ঃ৩০ এর দিকে ঢাকা থেকে আমরা চারজন রওনা দিলাম কাপ্তাই এর উদ্দেশ্যে। বাইকে এটা আমার প্রথম এতদূর ভ্রমণ তাই একটু ভয় ভয়ও লাগছিলো।

রাতে কুমিল্লা মিয়ামিতে গরুর ভুনা খিচুড়ি খেলাম, মুখে লেগে থাকার মত একটা খিচুড়ি।

ফেনীতে থাকা অবস্থায় আযান দিলো। এর মধ্যে সীতাকুণ্ড পার হতে হতেই দিনের আলো চকচক করে উঠল। সীতাকুণ্ড পার হয়ে চট্টগ্রাম গেইটের আগে আমরা ভাটিয়ারি দিয়ে ঢুকলাম। ভাটিয়ারি চেকপোস্ট সকাল ৬টার আগে খুলে না। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর গেট খুলো দিলো। ভাটিয়ারির রাস্তা এত সুন্দর আগে এত ভালোভাবে দেখিনি৷ দুপাশে সাজানো পাহাড়। সাড়ে সাতটা কি আটটার দিকে আমরা কাপ্তাই প্রশান্তি পার্কে চলে গেলাম। এই পার্কটা এত সুন্দর না দেখলে বোঝানো যাবেনা৷ সামনে সবুজ পানির কাপ্তাই লেকের একটা অংশ। কটেজের সামনে বসলেই লেক এবং ওপারের সাজানো পাহাড়গুলো দেখা যায়। মাঝে মাঝে লেকে ছোট ডিঙি নৌকা মাছ ধরছে।

এখানে অনেকগুলো দুই রুমের কটেজ আছে। আমরা আগেই বুকিং করে রাখা কটেজে উঠলাম। এবার ঘুমের পালা। নাস্তা করার মতও এনার্জি নাই কারও।

ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি দুপুরের আযান হচ্ছে৷ ওদেরকে ঘুমে রেখেই আমি লাঞ্চের অর্ডার করলাম।

লাঞ্চ করে আমরা লেকে কায়াকিং করলাম। এ আবার অন্যরকম মজা। দুপাশে পাহাড় মাঝে আমাদের নৌকা, কি সুন্দর দৃশ্যপট। এর মাঝে বাতাস বইতে শুরু করলো, আকাশ কালো করে হালকা বৃষ্টিও হলো। ঘন্টাখানেক কায়াকিং করে আমরা কাপ্তাই দেখতে বের হলাম। কাপ্তাই বাজার, জাতীয় উদ্যান, নৌবাহিনী পিকনিক স্পট, কাপ্তাই ঘাট, কাপ্তাই বাধ, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ আরও অনেক কিছু দেখলাম।

পুরো কাপ্তাইয়ে একটা গোছানো ভাব আছে। এর পাহাড়, লেক যেমন গোছানো তেমনি বাড়ীঘর, রাস্তা, পাহাড়ের উপর বাজার সবই গোছানো। লোকজন খুবই কম, একটু পরপর টং দোকান৷ দেখে মনে হতেই পারে আমি বাংলাদেশে নেই। আমার মাঝে মাঝেই মনে হচ্ছিলো নেপাল এরকম৷ পাহাড়ী মানুষ কাধে ঝুড়ি নিয়ে হেটে যায়।

সন্ধ্যায় নামাজ পড়ে বের হওয়ার পর সাজ্জাদের মাথায় একটা কুবুদ্ধি বের হলো৷ বুদ্ধিটা হলো এখান থেকে বান্দরবান খুবই কাছে, ৫০ কিলো মাত্র। কাপ্তাইয়ের সাথে সাথে বান্দরবান ঘুরে গেলে কেমন হয়।

ডিনার করলাম কাপ্তাই বাজারে। বাজারটা পাহাড়ের উপর৷ একটা হোটেলে কাপ্তাইয়ের স্পেশাল গরুর নেহাড়ি দিয়ে পরোটা খেলাম।

রাতটা আমরা কটেজেই থাকলাম। কটেজের সামনে লেকের পাড়ে কয়েকটা বাঁশের মাচা করে দেওয়া আছে। কি যে সুন্দর বলে বোঝানো যাবে না। অর্ধেক রাত মাচায়ই কেটে গেলো। নিলয় আর নাইমুল রুমে চলে গেছে। আমি আর সাজ্জাদ মাচায় তখনও। মাঝরাত মোটামুটি, আমরা কটেজে ফিরে তাদের রুমের জানালায় টোকা দিলাম। একটু পরপর ঢিল ছুড়লাম। কিছুক্ষণ আগে ওরা ভূতের গল্প বলছিলো। এবার ভয় পেয়েছে নিশ্চয়ই।

রাতটা ভালো কাটলো আলহামদুলিল্লাহ। সকালে উঠে দেখি বৃষ্টি। কি আর করা আবারও ঘুম। ঘুম ভাঙ্গলো নয়টায়। ব্যাগপ্যাক গুছানোর পালা। কারন এবার বান্দরবানের দিকে যেতে হবে। সাড়ে দশটার দিকে আমরা কাপ্তাই থেকে বান্দরবানের দিকে রওনা হলাম।
























Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *